Bhai Phota 2023 :ভাইফোঁটা বা ভাইটিপূজা বা ভাইফোঁটা উৎসব হল ভারতীয় উপমহাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব। এই উৎসবটি প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লাপক্ষের তৃতীয়ী তিথিতে পালিত হয়। এই দিনটিতে বোনেরা তাদের ভাইদের মাথায় ফোঁটা দিয়ে, তাদের আশীর্বাদ নেয় এবং তাদের দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করে।
ভাইফোঁটার ইতিহাস (Bhai Phota 2023)
ভাইফোঁটার ইতিহাস বেশ প্রাচীন। এই উৎসবের সাথে জড়িত একটি পৌরাণিক গল্প রয়েছে। এই গল্প অনুসারে, বিবস্বান ও সরণ্যূ পুত্র যম ও কন্যা যমী বা যমুনা ছিল যমজ ভাই-বোন। এই দুই ভাই ও বোনের মধ্যে ছিল গভীর স্নেহ-ভালোবাসা ও নিবিড় সম্প্রীতির বন্ধন। একদিন যম ও যমী পরস্পরকে হারিয়ে ফেলে। যমী তার ভাই যমকে খুঁজে পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে। অবশেষে, যমকে খুঁজে পেয়ে যমী তাকে মাথায় ফোঁটা দিয়ে আশীর্বাদ করে। যমও তার বোন যমীর আশীর্বাদ গ্রহণ করে। এই ঘটনার স্মরণে প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লাপক্ষের তৃতীয়ী তিথিতে ভাইফোঁটা উৎসব পালিত হয়।
ভাইফোঁটার উদ্দেশ্য
ভাইফোঁটার প্রধান উদ্দেশ্য হল ভাই-বোনের মধ্যে ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও দৃঢ় করা। এই উৎসবের মাধ্যমে বোনেরা তাদের ভাইদের জন্য আশীর্বাদ ও শুভকামনা জানায়। ভাইরাও তাদের বোনদের ভালোবাসা ও স্নেহের প্রতিদান দেয়।
ভাইফোঁটা উৎসবের আরেকটি উদ্দেশ্য হল ভাইদের জন্য দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করা। বোনেরা তাদের ভাইদের মাথায় ফোঁটা দিয়ে তাদের আশীর্বাদ করে। এই আশীর্বাদের মাধ্যমে তারা তাদের ভাইদের সুস্থতা ও নিরাপত্তা কামনা করে।
Read More : 253 Bed College Cancel List 2023 | পশ্চিমবঙ্গে 253 B.Ed কলেজ বাতিল তালিকা
ভাইফোঁটার রীতিনীতি
ভাইফোঁটা উৎসবের কিছু রীতিনীতি রয়েছে। এই রীতিনীতি অনুসারে, বোনেরা তাদের ভাইদের ঘরে যায়। তারা ভাইদের মাথায় ফোঁটা দেয় এবং তাদের আশীর্বাদ করে। ভাইরাও তাদের বোনদের উপহার দেয়।
ভাইফোঁটা উৎসবে বোনেরা সাধারণত সাদা শাড়ি পরে। তারা তাদের মাথায় ফুলের মালা পরে। ভাইরাও সাধারণত সাদা শার্ট ও প্যান্ট পরে। ভাইফোঁটা উৎসবের একটি বিশেষ খাবার হল “ভাইফোঁটা বর্তু”। এই বর্তুটি সাধারণত চাল, ডাল, মশলা ও চিনি দিয়ে তৈরি করা হয়।
ভাইফোঁটা উৎসবের গুরুত্ব
ভাইফোঁটা উৎসব ভারতীয় সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই উৎসবের মাধ্যমে ভাই-বোনের মধ্যে ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও দৃঢ় করা হয়। এই উৎসবটি ভাইদের জন্য দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনারও একটি সুযোগ।
ভাইফোঁটা উদযাপনের ধর্মীয় তাৎপর্য
ধর্মীয় গ্রন্থ অনুসারে, কার্তিক শুক্লা দ্বিতীয়ার দিনে, যমুনা তার ভাই যমের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বর পেয়েছিলেন, যার কারণে ভাইফোঁটা যম দ্বিতীয়া নামেও পরিচিত। প্রকৃতপক্ষে, যমরাজের বর অনুসারে যে ব্যক্তি এই দিনে যমুনায় স্নান করে যমের পূজা করবে, তাকে মৃত্যুর পর যমলোকে যেতে হবে না, তার ভাই অকাল মৃত্যু থেকে বাচবে।
অন্যদিকে, সূর্য কন্যা যমুনাকে দেবী স্বরূপা মনে করা হয়, যিনি সমস্ত কষ্ট দূর করেন। এ কারণে যম দ্বিতীয়ার দিনে যমুনা নদীতে স্নান করে যমুনা ও যমরাজের পূজা করার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। পুরাণ অনুসারে, এই দিনে করা পূজায় যমরাজ প্রসন্ন হন এবং কাঙ্ক্ষিত ফল দেন।