কোনও ব্যক্তি শারীরিকভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং (Engineering) ক্লাসে উপস্থিত না থাকলে, তাঁকে ইঞ্জিনিয়ার (Engineer) বলা যাবে না। বৃহস্পতিবার, এমনই গুরুত্বপূর্ণ রায় শোনাল পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট (Punjab Haryana High Court)। কয়েকদিন আগে দূরশিক্ষিয় শিক্ষিত ব্যক্তিকে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার পদ উন্নিত করা হয়েছিল। হরিয়ানা সরকারে এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে এক ব্যক্তি হাইকোর্টে দ্বারস্থ হলে আদালত ওই নির্দেশ দেয়।
Read More : এবার “ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস” এ নাম দুর্গাপুরের সৈয়দ মোশারফ হোসেনের
২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর হরিয়ানা পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশনে কর্মরত বিনোদ রাওয়ালকে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র (সিভিল) পদে উন্নিত করা হয়। কিন্তু ওই ব্যক্তি দূরশিক্ষার মাধ্যমে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। ওই পদে দূরশিক্ষায় প্রাপ্ত ডিগ্রির বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে পঞ্জাব ও হরিয়ানা কোর্টে মামলা দায়ের করেন নরেশ কুমার নামে এক ব্যক্তি। শারীরিকভাবে ক্লাসে উপস্থিত না হওয়ার জন্য কাউকে ইঞ্জিনিয়ার বলা যাবে না বলে মামলার পর্যবেক্ষণে জানায় পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট।
পর্যবেক্ষণে বিচারপতি অনুপিন্দর সিং গ্রেওয়াল বেঞ্চ বলেন যে
দূরশিক্ষার মাধ্যমে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি, শারীরিকভাবে ক্লাসে উপস্থিত হওয়ার কোর্সের সমান বলে মেনে নেওয়া খুব কঠিন। যে ব্যক্তি শারীরিকভাবে ক্লাসে উপস্থিত হননি এবং প্র্যাকটিক্যাল প্রশিক্ষণ নেননি, তাঁকে ইঞ্জিনিয়ার মানা যায় না বলে জানান। পর্যবেক্ষণে আরও বলেন যে দূরশিক্ষার মাধ্যমে যদি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি গ্রহণ করি, তাহলে সেই দিন খুব কাছে যখন এমবিবিএস কোর্স দূরশিক্ষার মাধ্যমে করা যাবে। আর সেটা ভয়ঙ্কর বলে জানান বিচারপতি গ্রেওয়াল।
(Engineering Degree New Rule) দূর শিক্ষার মাধ্যমে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জনকারী চিকিৎসকরে কাছে কোনও রোগী চিকিৎসা করাতে চায় কিনা, তা ভাবতেই কাঁপতে থাকি বলে রায় দিতে গিয়ে জানান বিচারপতি গ্রেওয়াল। ঠিক তেমনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজও খুব গুরুত্বপূ্র্ণ। তাঁরা নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত। দূরশিক্ষার মাধ্যমে ডিগ্রি নিলে তা জ্ঞানের অভাবে ভয়ঙ্কর হতে পারে বলে মনে করছেন পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের ওই বিচারপতি।
এর আগে মামলাকারী নরেশ কুমারের আইনজীবী অনুরাগ কয়াল বলেন, হরিয়ানা সরকারের পাবলিক ওয়ার্কস (বিল্ডিং অ্যান্ড রোডস ) অ্যাক্ট, ২০১০-এর ধারা ৬(এ) লঙ্ঘন করে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র (সিভিল) পদে উন্নিত করা হয়েছিল রাওয়ালকে।
তিনি আরও বলেন,
বিনোদ রাওয়াল জেআরএন রাজস্থান বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরশিক্ষার মাধ্যমে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেছিল, যা ইউজিসি এবং এআইসিটিই দ্বারা স্বীকৃত নয়।যদিও মামলাকারীর আইনজীবীর অভিযোগ নস্যাৎ করে রাওয়ালের আইনজীবী দাবি করেন, এআইসিটিই পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন তার মক্কেল।
এ ব্যাপারে ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন রাওয়ালের আইনজীবী। সেই সঙ্গে তাঁর মক্কেলের ডিগ্রি বৈধ বলে দাবি করেন। বর্তমানে পদোন্নতির মাধ্যমে সমস্ত সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন রাওয়াল। তাই, তা কেড়ে নেওয়া বৈধ নয় বলে দাবি করেন আইনজীবী।
যদিও রাওয়ালের আইজীবীর দাবি নস্যাৎ করেন বিচারপতি অনুপিন্দর সিং গ্রেওয়াল। সেই সঙ্গে বিনোদ রাওয়ালের ডিগ্রি বৈধ নয় বলে পর্যবেক্ষণে জানান। ডিএসপি খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে বেশ চাপে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর। এবার সরকারি এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র নিয়ে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের রায়ে সেই চাপ আরও বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।